কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

বাকৃবি বিশেষ সংবাদদাতা:

কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিলের আয়োজন করেছেন।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে সমাবর্তন চত্বরে এসে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা অনুষদের শিক্ষকদের করা মন্তব্যের জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ‘তুমি কে আমি কে ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিস্ট, কে বলেছে কে বলেছে শিক্ষক, শিক্ষক’, ‘এক দুই তিন চার, ফ্যাসিস্ট কেনো বললো স্যার’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন চত্বরে একযোগে ‘কারার ঐ লৌহ কপাট গানটি’ গেয়েছেন।

জানা যায়, একইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশুপালন অনুষদ কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বৈরাচারী রাজনীতিবিদ এবং যুগ্ম সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাসিম চক্রান্ত করে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন ২০১৯ সালে সর্বশেষ সংশোধনীতে অন্যায়ভাবে পশু ব্যবস্থাপনার ডোমেইন অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তারই নীলনকশা অনুযায়ী পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তথাকথিত কম্বাইন্ড নামে (বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স অ্যান্ড এএইচ) ডিগ্রিসমূহ চালু করেন, যেখানে ৭০-৭৫ শতাংশ চিকিৎসা সম্পর্কিত কোর্স পড়ানো হয়। যার ফলে পশু ব্যবস্থাপনায় ২৫-৩০ শতাংশ কোর্স দিয়ে যুগোপযোগী দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি করা সম্ভব নয়। তথাকথিত কম্বাইন্ড ডিগ্রি নামক এ অসম্পূর্ণ ডিগ্রি দ্বারা এ স্পেশালাইজেশনের যুগে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের গতি মন্থর এবং স্থবির হয়ে যাবে।

পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা, পশুপালন অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন যাবৎ কম্বাইন্ড ডিগ্রির আন্দোলনের বিরুদ্ধে অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ লক্ষ্য করছি। আজ শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনে আমাদের আন্দোলনকে বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা অভিযোগে কলঙ্কিত করার যে চেষ্টা করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। অভিযোগ করা হয়েছে আমরা জোরপূর্বক নবীন শিক্ষার্থীদের ভোট নিয়েছি। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ভোটগ্রহণের সময় হলভিত্তিক প্রতিনিধি নির্বাচনের একমাত্র কারণ ছিল শতভাগ ভোট নিশ্চিতকরণ, কোনো নির্দিষ্ট অপশনে জোর নয়। সবাই নিজেদের পছন্দমতো ভোট দিয়েছে। ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের নির্দেশে নিরপেক্ষ কমিটি ও শিক্ষার্থীদের সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। নবীনবরণ অনুষ্ঠান বর্জনে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করার অভিযোগও সত্য নয়। তারা নিজেরাই অনুষ্ঠান বর্জন করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে এবং আমরা তা সম্মান করি। কিন্তু আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার প্রচেষ্টা গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী জানান, ‘আমাদের ন্যায্য আন্দোলনকে ফ্যাসিজমের সাথে তুলনা করা, আগে “কতিপয় বিপথগামী” ট্যাগ দেয়া, কিংবা স্বৈরাচারী হাসিনার সাথে তুলনা করা অত্যন্ত বিব্রতকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। এটি একটি প্রফেশনাল আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি, অপপ্রচার বন্ধ করে দ্রুত কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রণয়নের লক্ষ্যে আগামী বুধবার জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল ডাকতে হবে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *