মো: আকতার হোসাইন, ব্যাংকার ও কলামিস্ট
বর্তমান বিশ্ব মোড়ল হিসাবে খ্যাত সবচেয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই দেশটি সারা বিশ্বে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শাসন করছে। যার নীতি অনেক সময় কিছু দেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সারা বিশ্বে মিত্র দেশগুলোর প্রতি অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে এবং সারা বিশ্বে রিসিভপ্রকাল ট্যারিফ বা পাল্টা বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করে। যার দোলাচলের খপ্পরে পড়ে সারা বিশ্বর ন্যায় বাংলাদেশও এবং ন্যাটো ভুক্ত দেশগুলো তার প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বাধ্য হয়। যেহেতু বাংলাদেশ আগামী বছরই এলডিসি থেকে উত্তরণ হয়ে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করবে। ঠিক তার পূর্বেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক নীতি গ্রহণ করার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হবে। যেহেতু বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় বাজার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ২০ শতাংশ। অপরদিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাণিজ্যে সবচেয়ে প্রতিযোগী দেশ হলো চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত। এই দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারলে বাংলাদেশ তার রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম বাজার হারাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে পাল্টা শুল্ক ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। কোনো কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তির কাছাকাছি চলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। কোন কোন দেশের সঙ্গে যুক্তির আলোচনায় নতুন জটিলতাও তৈরি হয়েছে। গত এপ্রিলে, ট্রাম্প বিশ্ব বাজারে অস্থিরতার মুখে শুল্ক স্থগিত করলেও আগস্টের ১ তারিখের মধ্যে চুক্তি না হলে একতরফা শুল্ক দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এসব কারণে ব্রিকস নেতারা স্থানীয় সময় রোববার (৬ জুলাই, ২০২৫) এক শীর্ষ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অবিবেচনাপূর্ণ’ আমদানি শুল্ক নীতির সমালোচনা করেছেন। ব্রিকস জোটের সদস্যরা অনেক বিষয়ে বিভক্ত হলেও ট্রাম্পের অস্থির শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে একমত হয়েছে—যদিও তারা সরাসরি নাম উল্লেখ করেনি ট্রাম্পের। এ কারণে ব্রিকসে যোগ দিতে যাওয়া দেশগুলোকে শাস্তি স্বরূপ আরো দশ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করা হবে বলে, ঘোষণা করেছে ট্রাম প্রশাসন। শুধু তাই নয় গ্রুপটির সাথে যদি কোন দেশ একাত্মতা প্রকাশ করে তাহলে ওই দেশের উপরেও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। আগামী ৯ তারিখের মধ্যে দেশটির বানিজ্যে বড় কিছু ঘোষণা দিতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে এখনো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ৯ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ সহ এখনও প্রায় ১ শত দেশ চুক্তি করতে পারেনি। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতির ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক চরম অস্থিরতা কাজ করছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি একেক দেশে একরকম বাণিজ্যের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। কোন কোন দেশের উপর যেন খড়গ ঝুলছে। একেক দেশ একেক রকম বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন। বিশেষ করে যেসব দেশের রপ্তানি শিল্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যেমন জাপান তার গাড়ি শিল্পে, মালয়েশিয়া ইলেকট্রনিক্সে, থাইল্যান্ডের আসবাব শিল্প এবং বাংলাদেশ তার তৈরি পোষাক শিল্প যেখানে অনিশ্চয়তার কালো ছায়া প্রভাব লক্ষণীয়। ট্রাম্প প্রশাসন তার শুল্কনীতির বেড়াজাল উঠিয়ে দিয়ে, বিশ্ব দরবারে নিজের অস্তিত্বকে আরো পাকাপোক্ত করছে। তার এই শুল্কনীতির ফলে, একদিকে যেমন তার দেশের পণ্য রপ্তানি বহু গুনে বৃদ্ধি পাবে, এবং কোন প্রকার শুল্ক ছাড়াই তার দেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে। বিপরীত দিকে যে দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি করে তাদেরকে গুনতে হবে অতিরিক্ত শুল্ক। সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দিক থেকে বহু গুণে লাভবান হবে। শুধু তাই নয় তার এই নীতির ফলে চীন ও রাশিয়া যে অস্ত্রের ব্যবসা বিভিন্ন দেশে করে আসছিল, তাও নিরবে বন্ধ হতে বাধ্য হবে। ফলে আমেরিকা তার আধিপত্য বিস্তারে আরো বেশি অগ্রাধিকার লাভ করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অগ্রাধিকার বা আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে, অনেক ক্ষুদ্র অর্থনীতির দেশকেও তিনি ছাড় দেননি। বাংলাদেশও তেমনি একটি দেশ যার অর্থনীতি উদীয়মান। এই উদীয়মান অর্থনীতির দেশটিও ট্রাম্প প্রশাসনের উম্মাদ শুল্কনীতির কালো ছোঁয়া হতে রক্ষা পায়নি।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে। গত ৩ এপ্রিল হঠাৎ ট্রাম্প প্রশাসন পাল্টা অর্থাৎ বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এতে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। শুল্ক আরোপের কার্যকরের তারিখ ছিল গত ৯ এপ্রিল। তবে ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা নতুন শুল্কহারের ঘোষণাও তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখে। এই স্থগিতের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগামী ৯ জুলাই হলেও নতুন নীতি অনুযায়ী শেষ হবে আগামী ১ লা আগস্ট। এরই প্রেক্ষাপটে দেশ দুটির মধ্যে সরাসরি, অনলাইনে এবং দ্বিপক্ষীয় অসংখ্য চিঠি চালাচালি এবং বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এ ব্যাপারে বেশ তৎপর রয়েছে। ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্য, চীন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামোগত চুক্তির ঘোষণা এসেছে । বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বাংলাদেশ তার প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত তারমধ্যে শুল্ক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা, যা ফোঁড়ার উপর বিষফোঁড়ার মতো অবস্থা তৈরি করেছে। তবে চীনের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি সবচেয়ে বেশি হয়। যা ২০২৪ সালে মার্কিন পণ্যে চীন থেকে আমদানি ছিল প্রায় ৪৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রপ্তানি ছিল ১৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার ফলে ঘাটতি ছিল ২৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। একারণেই বাড়তি ১১৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীনের উপর। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও চীন ‘জেনেভা চুক্তি’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অতিরিক্ত সমঝোতায় পৌঁছেছে। সেখানে দুই দেশ সাময়িক বাণিজ্যযুদ্ধ-বিরতিতে সম্মত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের ক্ষেত্রে যে কারণে নমনীয় তা মূলত চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রপ্তানি দ্রুত পুনরায় চালু করার প্রক্রিয়া নিয়ে এই সমঝোতা। চুক্তিটি জেনেভা চুক্তির ধারাবাহিকতা। জেনেভায় উভয় পক্ষই একমত হয়েছিল, পরস্পরের পণ্যে আরোপিত শুল্ক ও পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হবে। লক্ষ্য ছিল, দ্রুতই বৃহৎ বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানো। পরে লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় চূড়ান্ত চুক্তির কাঠামো নির্ধারিত হয় এবং ট্রাম্প যে চুক্তির কথা বলেছেন, সেটি সম্ভবত সেই কাঠামোর আনুষ্ঠানিক রূপ। পূর্ণাঙ্গ চুক্তির সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগস্ট মাস। আরো অন্যতম একটি কারণ হলো চীন বা ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর যেভাবে কর্তিত্ব আরো করতে পারবে, বিশ্বের অন্য সকল রাষ্ট্র তা করতে পারবেনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পণ্যের জন্যই এদেশটির উপর নির্ভরশীল। এ কারণেই চীনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ কারণে চীনের প্রতি একটু হলেও নমনীয়।
অপরদিকে মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিয়েতনামের সঙ্গে স্থল পণ্যে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ১৮ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ভিয়েতনামের পণ্যের উপর ধার্য করা হয়েছে বাড়তি ৪৬ শতাংশ শুল্ক। জুলাই ৩, ২০২৫ তারিখে ট্রাম্প প্রশাসন একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তির কথা ঘোষণা করে যে, এখন থেকে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি হওয়া পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে এবং যদি অন্য কোন দেশ তাদের পণ্য ভিয়েতনামের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়, তাহলে সেসব পণ্যে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে । এদুটি দেশের সাথে হওয়া চুক্তি বর্তমান বাংলাদেশের চিন্তার ভাজ ফেলেছে।
এখন পর্যন্ত কম্বোডিয়ার উপর আরোপিত বাড়তি ৪৯ শতাংশ শুল্কের অগ্রগতির ব্যাপারে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। যদিও যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় অচলাবস্থা। তবে ভারত বাংলাদেশের বানিজ্যে প্রতিযোগী দেশ নয়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে যে পন্য আমদানি করে তা আমাদের দেশ থেকে রপ্তানি হয় না। ফলে ভারত বাংলাদেশের জন্য চিন্তার বিষয় নয়। চিন্তার বিষয় হলো চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া।
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ১২ জুন ২০২৫ তারিখে, একটি নন ডিসপোজআর এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে বাংলাদেশ পাল্টা শুল্ক থেকে বাঁচার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে কিছু পণ্য আমদানির কথা ভাবছে। উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। ইউএস সেনসাস ব্যুরোর হিসাবে, এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ২৫০ কোটি ডলার বেড়েছে। তার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে ১২৫ কোটি ডলারের মতো। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয়েছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এক বছরে বাণিজ্য-ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশের পক্ষে। এই ঘাটতিটা কমানোর জন্য বাংলাদেশ এবারে জাতীয় বাজেটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি যোগ্য বর্তমানে ১৯০টি পণ্যে কোনো শুল্ক নেই। আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সাধারণত রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করে। এ দুই দেশের গম তুলনামূলক সস্তা হওয়া সত্ত্বেও টনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ মার্কিন ডলার বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটি থেকে গম আমদানিতে জাহাজ ভাড়াও বেশি। সান্তনার কথা যুক্তরাষ্ট্রের গমের খাদ্যমান বেশি। এ ছাড়া বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কেনার পদক্ষেপ নিচ্ছে। দেশটি থেকে তুলা আমদানির প্রক্রিয়াও সহজ করছে বাংলাদেশ। মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলপিজি গ্যাস আমদানির চিন্তা করছে সরকার।
অনেক ভাবতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের ফলে বাংলাদেশ এতটা উদ্বিগ্ন কেন। উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে বলেই বাংলাদেশ এতটা উদ্বিগ্ন। যদি বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতা আসতে না পারে, তাহলে বিশাল রপ্তানি বাজার হারাবে। কারণ ইতিমধ্যেই চীন ও ভিয়েতনাম সমঝোতা করে ফেলেছে। আর এ বাজারটি হাতছাড়া হলে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতটি ধসে পড়বে। বাংলাদেশ যদি তার রপ্তানি বাণিজ্যের ১০ শতাংশও হারায়, তাহলে তৈরি পোশাক শিল্পে শতশত লোক বেকার হয়ে পড়বে। শুধু কি তাই, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত কম হবে ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাবে। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি একটু ভালো হওয়াতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৩১ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন প্রকার সুযোগ নেই। যদি চীন ও ভিয়েতনাম সমঝোতা আসতে না পারতো তাহলে বাংলাদেশের উদ্দিগ্ন হওয়ার কিছু ছিল না। এ কারণে এবার আমদানি শুল্কে এত বিশাল ছাড় দিয়েছেন বাংলাদেশ। যতক্ষণ পর্যন্ত একটি সমঝোতা আসা না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, যদিও ৯ জুলাই দুই দেশের মধ্যে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও একটু সহনশীল হওয়া উচিত বাংলাদেশের প্রতি। কারণ দেশটি এখনও অর্থনীতিতে স্বাবলম্বী নয়, একটি দুর্বল অর্থনীতির দেশ এবং বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির একটি দেশ, এই উদীয়মান অর্থনীতির দেশের ঘাড়ে খড়গ ঝুলিয়ে দিলে দেশটি কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা।