ছয় দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সারা দেশে রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজকের মতো তারা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছেন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে এই ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী।
তিনি জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকা পলিটেকনিকের অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক হলেও দাবি আদায়ে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি। দাবি মানা হয়নি লিখিতভাবে। তাই আগামীকাল থেকে রেল অবরোধ কর্মসূচি চলবে, এবং সারা দেশের শিক্ষার্থীদের এতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জুবায়ের বলেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। যদি একজন অধ্যক্ষকে বদলি করতেও সারাদিন সময় লাগে, তাহলে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে? তিনি সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে এবং এই রেল অবরোধের মধ্য দিয়েই অসহযোগ আন্দোলনের সূচনা হলো।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করলে দেশের উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। আজকের জন্য সড়ক অবরোধ স্থগিত করা হয়েছে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, আন্দোলনের আরেক নেতা মাশফি রহমান জানান, জনদুর্ভোগ বিবেচনায় আজকের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। রেল অবরোধ কবে থেকে শুরু হবে তা কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে জানিয়ে দেওয়া হবে।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি:
১. হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল করতে হবে। সেই সঙ্গে এই পদের নাম পরিবর্তন, সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা ও ২০২১ সালের বিতর্কিত নিয়োগ বাতিল করতে হবে।
২. ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বয়সসীমা নির্ধারণ করতে হবে এবং উন্নতমানের চার বছর মেয়াদি ইংরেজি মাধ্যমের কারিকুলাম চালু করতে হবে।
৩. উপ-সহকারী প্রকৌশলীর (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পদের নিয়ম লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. কারিগরি শিক্ষা পরিচালনায় সকল গুরুত্বপূর্ণ পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে।
৫. কারিগরি ও সাধারণ শিক্ষার মধ্যে বৈষম্য দূর করতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে একটি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন ও কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
৬. উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়াতে একটি আধুনিক টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পলিটেকনিক পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ ভর্তি সুযোগ দিতে হবে এবং সেগুলো ডুয়েটের আওতায় পরিচালিত করতে হবে।