বাকৃবিতে সিন্ডিকেট সভা স্থগিত: সংকট নিরসনে অনিশ্চয়তা

বাকৃবি বিশেষ সংবাদদাতা:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক জানিয়েছেন, ‘শিক্ষার্থীরা সহায়তা না করায় সিন্ডিকেট সভা হয়নি। তাই সংকট সমাধানে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, “সংকট উত্তরণের রাস্তা একটাই সেটি হলো তারা যদি এগিয়ে আসতো তাহলে আমরা যৌথভাবে কাজ করতে পারতাম। এখন তারা কি চায় সেটা তারা বলতে পারবে। আমরা চাচ্ছিলাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দেই। কিন্তু সেই জায়গায় তারা যেহেতু সহযোগিতা করছে না বাকি সিদ্ধান্ত তাদের উপর।”

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ছাত্রবিষয়ক বিভাগের অফিসে এক মতবিনিময়কালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জেলা প্রশাসকের আন্ডারে দেয়া ছিল। এখন তারা যদি কোন ধ্বংসাত্মক কাজ করে বা কোন আন্দোলন করে সেটা দেখবে জেলা প্রশাসক। আপাতত আমরা কোন সমাধানের পথ দেখছি না।”

এসময় উপস্থিত সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. সোনিয়া সেহেলী বলেন, “মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের আলোচনায় ভিসি স্যার বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে লিখিত চেয়েছিলেন। যেখানে ছাত্র-শিক্ষক সবার সম্মতিক্রমে স্বাক্ষর থাকবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সাথে আমারা এ বিষয়ে বারবার কথা বললেও তারা এতে সম্মতি দেয়নি। যে কারণে সিন্ডিকেট হচ্ছে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চলমান আন্দোলনের মুখপাত্র ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, “স্যাররা আমাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন, আমরা মঙ্গলবার রাতের মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিলাম সবাই স্বাক্ষর করেছি, তাহলে আবার নতুন করে কিসের স্বাক্ষর। তাদের কথার সাথে একমত নয়। পরবর্তীতে কি কর্মসূচি হবে তা জানানো হবে সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে।”

এহসানুল আরও বলেন, “গতকাল পাঁচ ঘন্টাব্যাপী মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের প্রথম দুইটি দাবি মেনে নিবেন এবং লিখিত আকারে দিবেন। পরবর্তীতে বাকি চারটি দাবি নিয়ে আলোচনা চলমান থাকবে। আমাদের দুই দফা দাবি প্রশাসন বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন করলেই কেবল আমরা তাদের সাথে পুনরায় আলোচনায় বসবো।”

প্রসঙ্গত, গতকাল ২ সেপ্টেম্বর সন্ধায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইনে আলোচনায় যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ মিলিয়ে ৪০ জনেরও অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠক শেষে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক জানিয়েছিলেন, “শিক্ষার্থীরা এখন থেকে হলে থাকতে পারবে। আগামীকাল (বুধবার) সিন্ডিকেট বৈঠক শেষে বিজ্ঞপ্তি আকারে হল ছাড়ার নির্দেশনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে।”

কম্বাইন্ড ডিগ্রির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। বহিরাগতদের হামলার ঘটনাও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *