দাম বাড়লেও লোকসানে পেঁয়াজচাষিরা

কৃষি ও জনপদ ডেস্ক:

গত কয়েক সপ্তাহে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হলেও লোকসানের মুখে পড়েছেন পেঁয়াজচাষিরা। গত মৌসুমে পেঁয়াজের বেশি দাম দেখে যেসব চাষি এবার আগামজাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন তাদের অনেকেই বিপুল লোকসান গুনেছেন। তারা আগামীতে পেঁয়াজ চাষ করবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছেন।

পেঁয়াজচাষিরা আরও বলছেন, ভালো দামের আশায় যারা আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন, ন্যায্য দাম না পেয়ে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে যারা ছাঁচি পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন তারা কিছুটা দাম পেয়েছেন। কোনোভাবে আবাদের খরচ তুলতে পেরেছেন। আগাম জাতের পেঁয়াজচাষিরা পেঁয়াজ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না।

একজন পেঁয়াজচাষি জানান, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। সব পেঁয়াজ বিক্রি করে তিনি পুরো টাকা তুলতে পারবেন কিনা চিন্তায় আছেন।

এখন বিভিন্ন মোকামে স্থানভেদে পাইকারিতে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মন দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। আমন আবাদের খরচ মেটাতে বাকি পেঁয়াজ তিনি বিক্রি শুরু করেছেন পেঁয়াজচাষিরা। পেঁয়াজচাষিদের প্রশ্ন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে ৬০ টাকা কেজি হিসেবে ২ হাজার ৪০০ টাকা মন দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু চাষিরা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ১ হাজার ৮০০ মন দরে। সব পেঁয়াজ বিক্রি করে তিনি হয়তো কোনোমতে খরচ তুলতে পারবেন কিন্তু খাটা খাটনির সবই বেকার।

এই পেঁয়াজচাষি আরও বলেন, বাড়িতে পেঁয়াজ রাখার জায়গা নেই। ফলে জমি থেকে তুলেই বিক্রি করে দিয়েছি।

দেশের আরও কয়েকটি এলাকার পেঁয়াজচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজের ফলন হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ মন। এক বিঘায় পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। পেঁয়াজের ফলন বিবেচনায় চাষিদের এবার লোকসান হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অধিকাংশ চাষি জমি ধার-দেনা করে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তারা দেনা মেটাতে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ কারণে দেশের চাষিরা পেঁয়াজের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সুত্র বলছে, কিছু পেঁয়াজ এখনও জমিতে রয়েছে। কিছু পেঁয়াজচাষিদের কাছেও রয়েছে। কৃষক যাতে উৎপাদনের শুরুতে ভালো দাম পায়, সে জন্য তারা এয়ার ফ্লো পদ্ধতিতে কৃষকের বাড়িতে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার নির্মাণের জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *